প্রিয়জনকে হারিয়ে এ বছর দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম বড় পুজো একডালিয়া এভারগ্রিনে যেন বিষাদের সুর।সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে হারিয়ে ফেলার ক্ষতটা এখনও দগদগে একডালিয়ার পুজো কমিটির সদস্যদের মধ্যে।তবে শুধু এলাকাবাসী বা পুজো কমিটির সদস্যদের মধ্যেই না, সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের চলে যাওয়াটা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) মনেও কতটা ঝড় তুলেছে তা মঙ্গলবার আবারও তিনি বুঝিয়ে দিলেন।

মঙ্গলবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী যান একডালিয়া এভারগ্রিনে।পুজো উদ্বোধন করে প্রতিমাকে শাড়ি অর্পণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।সঙ্গে ছিলেন প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী ও ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)।এরপরই পুজো প্রাঙ্গণ থেকেই প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতি চারণা করেন তিনি।বলেন, একডালিয়ার পুজো হচ্ছে। তবে এই পুজো আজ অভিভাবকহীন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই পুজো নিয়ে আমার সঙ্গে ঝগড়া করতেন। আমাকে বলতেন তুই কবে ডেট দিবি। আগে ডেটটা কনফার্ম কর। এত ভালোবাসা-আন্তরিকতা একজন মানুষের পুজোর সঙ্গে। আমি ভাবতেও পারি না। বালিগঞ্জে অনেক জায়গায় পুজো উদ্বোধন করলাম। যেখানে গেছি সুব্রতদার কথা মনে পড়ছিল।’

তারপরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গত বছর কালীপুজোর সময় সুব্রতদা আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। যদিও তাঁর ছেড়ে যাওয়ার মতো বয়স ছিল না। সব সময় চনমনে, আনন্দে থাকতেন। ছোট্টবেলাতে রাজনীতি তাঁর সঙ্গে করেছি। সেই সময় আমার কাজই ছিল সকাল আটটার মধ্যে সুব্রতদার বাড়ি যাওয়া ও সেখানে গিয়ে সারাদিনের পরিকল্পনা করা। আর আজ ভাবতেই পারছি না সুব্রতদা নেই। হয়তো সবই আছে। প্যান্ডেল-লাইট-পুজো সবই আছে কিন্তু লিডারটা নেই।’

মুখ্যমন্ত্রীর আরও সংযোজন, ‘জেলে যখন বুকে ব্যথা ওঠে তখন ববি সুব্রতদা কে বলেছিলেন, হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হন। কিন্তু সুব্রতদা ববিকে বলেছিলেন, ববি আমি খুব অসম্মানিত হয়েছি। আমাকে একটা বন্দুক দে। আমি নিজেকে গুলি করে শেষ করব। অন্য গুলিতে যারা আমায় অসম্মানিত করেছে তাদের শেষ করব।’

আবেগপ্রবণ হয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি জেলায় গেলে বলতেন, আমার জন্য কটকটি কিনে এনেছিস? আমায় লুকিয়ে সুব্রত দাকে সাপ্লাই করতে হত। নইলে বৌদি বকবে। আমার এখানে আসা মানে একরাশ দুঃখ নিয়ে আসা। কত কথা মনে পড়ছে।’ জানা যায় এদিন একডালিয়া এভারগ্রিন ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী সিংহিপার্ক, বালিগঞ্জ কালচারাল, মুদিয়ালি সহ বেশ কয়েকটি পুজোর উদ্বোধন করেন।

 

আরো পড়ুন:Mamata Banerjee:চেতলা অগ্রণী ক্লাবে ‘দেবীর’ চক্ষুদান করলেন মুখ্যমন্ত্রী!