দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি (President) হবেন কে? সেই নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে প্রার্থীদের তোড়জোড়। এই পরিস্থিতিতে ভারতের রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনে ক্ষমতাসীন বিজেপি তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন রাজ্যপাল ও ওড়িশার আদিবাসী নেতা দ্রৌপদী মুর্মুকে (Droupadi Murmu) প্রার্থী করেছে দলটি।

 

এদিকে আজ থেকেই বিজেপি জোটের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদি মুর্মুকে (Droupadi Murmu)দেওয়া হল জেড প্লাস ক্যাটেগরির নিরাপত্তা।দ্রৌপদি মুর্মু রাজ্যে বা দেশের যে প্রান্তেই যাবেন, তার সঙ্গে থাকবেন আধাসেনা। ব্যক্তিগত নিরাপত্তার পাশাপাশি বিজেপি জোটের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর বাড়িও কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে। বুধবার সকালেই তার বাড়ির নিরাপত্তার দায়িত্ব তুলে নেয় সিআরপিএফ জওয়ানরা।

 

মূলত আগামী ২৪ জুলাই শেষ হচ্ছে বর্তমান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের মেয়াদ। তার এই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ঘোষণা করা হয়। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি এবং বিরোধী দলগুলি তাদের রাষ্ট্রপতি পদ প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে উঠে পড়ে লাগে।এই তোড়জোড়ের মধ্যেই মঙ্গলবার বিরোধী দলগুলির তরফ থেকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয় যশবন্ত সিনহার। অন্যদিকে বিরোধীদের রাষ্ট্রপতি পদ প্রার্থীর নাম ঘোষণার পরই শাসক দল বিজেপি তাদের এনডিএ রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর নাম হিসাবে ঘোষণা করে দ্রৌপদী মুর্মুর নাম। সমস্ত হিসাব নিকাশ যদি ঠিক থাকে তাহলে এই দ্রৌপদী মুর্মুই হতে চলেছেন দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি এবং তিনি হবেন প্রথম আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতি।

 

এদিকে তাঁর নাম রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা হতেই,বুধবার সকালে দ্রৌপদী পৌঁছে যান ময়ূরভঞ্জের রায়রাংপুরের জগন্নাথ মন্দিরে। সেখানে পুজো দেওয়ার পর চলে যান শিব মন্দিরে। সেই মন্দির চত্বরেই হাতে তুলে নেন ঝাঁটা। সাফাই করেন মন্দির চত্বর।

 

তবে রাজনৈতিক পরিসরে তেমন পরিচিত নাম না হলেও রাজনীতিতে তাঁর দীর্ঘদিনের যাতায়াত।তাঁর রাজনৈতিক, প্রশাসনিক জীবন শুরু হয় ১৯৯৭ সালে, তিনি পৌর নির্বাচনে জয় পান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে বসেন। এর পর ১৯৯৭ সালেই বিজেপির রাজ্য আদিবাসী সংগঠনের সহ-সভাপতি হন। সেখান থেকে ২০০২ সালে তিনি যান ওড়িশা সরকারের মত্‍স দফতরে। তার পর পশুপালন দফতরে। ২০০০ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন বিধায়ক, পাশাপাশি স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিবহন মন্ত্রীও ছিলেন ওড়িশা সরকারের। এর পর ২০০৬-২০০৯ সালে তিনি সামলান বিজেপির আদিবাসী সংগঠনের রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব। তিনি সামলেছেন ময়ুরভঞ্জ জেলা সভাপতির দায়িত্বও। এর পর ২০১৫ সালে তিনি বিজেপির আদিবাসী সংগঠনের জাতীয় কার্যনির্বাহী সদস্যপদ লাভ করেন। তার পর ২০১৫ সাল থেকে ২০২১ পর্যন্ত তিনি ছিলেন ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল। সেই দ্রৌপদীকেই এ বার রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করছে বিজেপি।

 

ঝাড়খণ্ডের সরকারি আধিকারিক থেকে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ।তাই রাষ্ট্রপতি পদে দ্রৌপদীর জয়ের সম্ভাবনা যথেষ্টই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও আশা প্রকাশ করেছেন, রাষ্ট্রপতি হিসেবে অসাধরণ ভূমিকা পালন করবেন দ্রৌপদী।এদিকে আবার, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন বিরোধীদের প্রার্থী যশবন্ত সিনহাও। ইতিমধ্যেই একটি প্রচার কমিটি তৈরি করেছেন তিনি। আজই সেই কমিটির প্রথম বৈঠক ডেকেছেন যশবন্ত সিনহা।সব মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত কি হয় এখন সেটাই দেখার।

 

আরো পড়ুন:Viswanathan Anand: আনন্দের হাতে দাবা অলিম্পিয়াডের মশাল তুলে দিলেন মোদী