দুই ছেলেকে হারিয়ে রাতারাতি গ্রাম ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল ভাদু শেখের (Bhadu sheikh) পরিবার।পরিবারের বাকি সদস্যদের আর হারাতে চান না ভাদু শেখের পরিবার। তাই, গ্রাম ছাড়ার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।

 

নিহত ভাদুর বাবা মারফত শেখ বলেন, ”আমাদের নিজস্ব সুখ যেখানে পাব সেখানে যাব।” খানিক থেমে বৃদ্ধ পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন, ”রাত্রি বেলা ছেলেকে মেরে দিল। আমি কোন ভরসায় এই গ্রামে থাকব, আপনি বলতে পারেন?” জবাবও দিয়েছেন নিজেই, ”যে নেতাদের জন্য আমি সর্বহারা হলাম, জমি বিক্রি করে আমি পার্টি করেছি, সেই নেতারা যদি নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকে, আমাদের দিকে না তাকায়, তাহলে থেকে লাভ কি?”কোথায় যাচ্ছেন, তা অবশ্য স্পষ্ট করতে চাননি তিনি। তাঁর কথায়, ”অনেক রাজনীতি হল। আর এসবের মধ্যে থাকতে চাই না। তাই গ্রাম ছাড়ার সিদ্ধান্ত।”

 

জানা যায় বাবা, মা-সহ ভাদু শেখরা (Bhadu sheikh) ৬ ভাই ছিল। এক ছেলে বাইরে থাকেন। বাকিরা বগটুই গ্রামে এক সঙ্গেই থাকতেন।২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি খুন হয়েছিলেন ভাদু শেখের মেজো ভাই বাবর শেখ।বগটুই গ্রামের কবরস্থানের কাছে খুন হন বাবর। তাঁর মোটরবাইক আটকে মাথায় গুলি করা হয়েছিল। তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন সেই ভাদুই। রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাবরকে স্থানান্তরিত করা হয় বর্ধমান মেডিক্যালে। কিন্তু পথেই মারা যান তিনি।আর এ বছর সেই একই কায়দায় খুন হলেন দাদা নিজেই।সোমবার রাতে রামপুরহাট এক নম্বর ব্লকের বগটুই গ্রামে খুন হন তিনি।তাই মঙ্গলবার সন্ধেয় চার ছেলের জীবন বাঁচাতে ভাদু শেখের বাবা মারফত তিন ছেলে-সহ পরিবারের ১৬ জনকে নিয়ে গ্রাম ছাড়েন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেখা যায়, সংসারের প্রয়োজনীয় সামগ্রী যন্ত্র চালিত ভ্যানে চাপিয়ে গ্রাম ছাড়ছেন তাঁরা। বছর আটষট্টির মারফত আরো বলেন, ”এক ছেলে গ্রামের বাইরে থাকেন। তাঁকেও বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। আর কোনও ছেলেকে এই ভাবে মরতে দেব না। দুই ছেলেকে দুষ্কৃতীরা যে ভাবে খুন করল, গ্রামে যে উত্তেজনার ছবি দেখলাম তাতে গ্রামে থাকার সাহস পরিবারের নেই।”

 

 

আরো পড়ুন:Firhad Hakim:রামপুরহাট পরিদর্শনে ফিরহাদ হাকিমকে পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী