পূজোর পুরোহিত মানেই কোনো ব্রাহ্মণ পুরুষ। সে যেকোনো পূজোই হোক না কেন! কোনো মহিলার পৌরহিত্য করার নজির মেলেনি এতোদিন। তবে মহিলার পৌরহিত্যকে কেন্দ্র করে তৈরী হয়েছে সিনেমা। সিনেমার নাম “ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি”। আজ বাগদেবীর আরাধনায় (Saraswati Puja) এই সিনেমারই বাস্তব রূপ ধরা পড়ল। ভাবনা চিন্তার মধ্যে নিজেদের সীমাবদ্ধ রেখে নয়, বাস্তব দৃষ্টান্ত স্থাপন করল বাংলার দুই কন্যা৷ একজন অশোকনগরের দশম শ্রেণির ছাত্রী৷ অন্যজন বীরভূমের ইলমবাজারের আদিবাসী কন্যা৷ পুরোহিতের আসনে বসে বাগদেবীর আরাধনা করলেন তারা৷
অশোকনগর বিদ্যাসাগর বাণীভবন উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী শর্মিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায়। ব্রাহ্মণ পরিবারের মেয়ে শর্মিষ্ঠা৷ পূজো করার তালিমও নিয়েছে সে। তার বাবাও একজন পুরোহিত। নিজের হাতে মেয়েকে পূজোর নিয়মবিধি শিখিয়েছেন তিনি। স্কুলের প্রধান শিক্ষকও ছক ভাঙার স্রোতে সামিল হয়ে স্বীকৃতি দিয়েছেন শর্মিষ্ঠার ইচ্ছেকে। তিনি চেয়েছিলেন, এই বছর স্কুলের পুজোটা করুক তাদের স্কুলেরই ছাত্রী। সেই মতো আজ সকালে শুক্ল পঞ্চমী তিথিতে অশোকনগর বিদ্যাসাগর বাণীভবন উচ্চবিদ্যালয়ে বাগদেবীর আরাধনা (Saraswati Puja) করল শর্মিষ্ঠা।
সূত্রের খবর, এ প্রসঙ্গে শর্মিষ্ঠার বক্তব্য, ‘‘নারীদের দিয়ে পূজো করানোর কথা আমরা সচরাচর ভাবতে পারি না। কিন্তু আমাদের প্রধান শিক্ষকের অনুপ্রেণায় চিরাচরিত প্রথা ভেঙে আমরা ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ নিতে পারলাম। স্কুলের সকলেই আমরা খুব খুশি।”
অন্যদিকে ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত তৈরি হয়েছে বীরভূমেও৷ লালমাটির দেশে ইলমবাজারের আদিবাসী কণ্যা চৈতালি মুর্মু৷ তার হাতেই পূজিত হলেন বাগদেবী৷ শিক্ষিকা প্রীতিকণা দেবী আদিবাসীদের জন্য গড়ে তুলেছিলেন ছোট্ট একটি স্কুল৷ সেই স্কুলেরই ছাত্রী চৈতালী৷ আজ বসন্ত পঞ্চমীতে সংস্কৃত মন্ত্র উচ্চারণে বাগদেবীর আরাধনা (Saraswati Puja) করল সে৷ এই প্রথম পুরোহিতের আসেন বসল কোনও আদিবাসী মেয়ে৷ সেই সঙ্গে সমাজের গতানুগতিক প্রথা ভাঙার এই কাজকে এগিয়ে নিয়ে গেলেন বহুদূর।