কথায় আছে ‘সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে’! কিন্তু এই প্রবাদ যে সবক্ষেত্রে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে তা নয়। আর তারই বাস্তব চিত্র ধরা পড়ল কালনায়। পরপর দুটি কণ্যাসন্তানের জন্ম দেয় স্ত্রী। ফলে স্ত্রীর উপর অকথ্য অত্যাচারের (Domestic Violence) অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। এমনকি বধূর সারা শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা, গোপানাঙ্গে আঘাত স্বামীর৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই মহিলাকে ভর্তি করা হয়েছে কালনা হাসপাতালে।

দুটি কন্যা সন্তান হওয়ায় বছর খানেক ধরেই এই অত্যাচার চলছিল৷ তবে মাস খানেক ধরে বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য চাপ দিচ্ছিল তার স্বামী৷ কারণ মেয়ে হওয়ায় স্ত্রীকে পছন্দ নয় তার৷ কিন্তু স্ত্রী বিবাহ বিচ্ছেদে রাজি না হওয়ায় শুরু হয় পাশবিক অত্যাচার (Domestic Violence)৷ সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়ার পাশাপাশি শুরু হয় বেধরক মারধর৷ গোপন স্থানে মারধর করা হত তাকে৷ যাতে বাইরের কেউ জানতে না পারে।

দীর্ঘদিনের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে শেষমেশ অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই গৃহবধূ৷ বাপের বাড়ির লোকজন তাকে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিয়ে আসে৷ তারপরেই এই নৃশংস অত্যাচারের কথা তারা জানতে পারেন৷ গত এক মাসে এই অত্যাচার (Domestic Violence) মাত্রা ছাড়িয়েছিল৷ গুরুতর আহত অবস্থায় কালনা মহকুমা হাসপাতালে ওই মহিলা চিকিৎসাধীন রয়েছেন৷ সূত্রের খবর, তার পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, মেয়ে সুস্থ হওয়ার পরেই স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে৷

এদিকে ওই গৃহবধূর অভিযোগ, প্রথমবার কন্যা সন্তান হওয়ার পর থেকেই চলছিল অত্যাচার ৷ দ্বিতীয়বার কন্যা সন্তান হওয়ায় সেই অত্যাচারের (Domestic Violence) মাত্রা ওঠে চরমে ৷ মাস খানেক আগে তাকে সাফ জানানো হয়, দুই কন্যা সন্তান হওয়ায় তাকে আর ঘরে রাখা যাবে না ৷ বিবাহ বিচ্ছেদ করতে হবে৷

এক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, এই ঘটনা প্রসঙ্গে সমাজকর্মী শাশ্বতী ঘোষ বলেন, স্ত্রীর কন্যা সন্তান হওয়ার জন্য অবদান রয়েছে স্বামীরও। এটা সবার আগে ওকে বোঝানো দরকার৷ ছেলে হবে না মেয়ে হবে, তা সম্পূর্ণ রূপে নির্ভর করে স্বামীর উপর৷ এর বিরুদ্ধে সরকারি ভাবে প্রচার করা দরকার৷ ওই স্বামীর হয়তো শাস্তি হবে৷ কিন্তু দুই কন্যা সন্তানকে নিয়ে ওই স্ত্রী কোথায় থাকবেন তা নিশ্চিত করতে হবে প্রশাসন ও তার পরিবারকে৷ মাঝপথে যাতে মামলা প্রত্যাহার করার জন্য তাকে চাপ দেওয়া না হয় এবং তিনি যাতে ক্ষতিপূরণ পান, সেই বিষয়টিও দেখতে হবে প্রশাসনকে৷ (Domestic Violence)