নবাবের কথা ছাড়া নড়ে না সন্দেশখালীতে একটাও পাতা!একসময়ের বাম থেকে এখন তৃণমূল!তাবড় তাবড় মন্ত্রী-বিধায়কদের গ্রেফতার করা ইডিকে পিছু হটতে হল সন্দেশখালীর বাহুবলীর গ্রাম থেকে! কে এই শাহজাহান শেখ?কিভাবে উত্থান হলো তার?কিভাবে সন্দেশখালীর বাহুবলী হয়ে উঠলেন তিনি?সিনেমাকেও হার মানাবে জেলা তৃণমূল নেতার উত্থানের গল্পঃ!

শুক্রবার সাড়ে সাতটা নাগাদ উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে হানা দেয় ইডির পাঁচ আধিকারিক। সঙ্গে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যরাও।কিন্তু সেখানে যাওয়ার সময় গুরুত্বর জখম হয় তদন্তকারী কর্মকর্তারা।কোনো মতে প্রাণ হাতে নিয়ে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হন দুঁদে আধিকারিকদের। এমনকী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয়বাহিনীর জওয়ানরাও পালাতে বাধ্য হলেন।

ইডি অফিসারদের সঙ্গে এমন যিনি করতে পারেন তাঁর বুকের পাটা রয়েছে বলতে হয়। এখন কৌতূহলের বিষয় হল, কে এই শেখ শাহজাহান? কেন তাঁকে সন্দেশখালির বাদশাহ বলেন লোকজন? জানেন?কিভাবে রাজনীতিতে উত্থান হলো তার?

উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের মত্‍স্য ও প্রাণী সম্পদ কর্মাধ্যক্ষের পাশাপাশি সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি শেখ শাহজাহান। এই মুহূর্তে ইডির হেফাজতে থাকা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত তিনি। শেখ শাহজাহানের উত্থান বাম জমানার শেষ দিকে। এলাকার অনেকে বলেন, শেখ শাহজাহান এ রাজ্যের লোকই নন। তিনি অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ থেকে এসেছেন এখানে। বামফ্রন্ট জমানার শেষ দিকে স্থানীয় বিধায়ক অনন্ত রায়ের অত্যন্ত আস্থাভাজন হয়ে উঠেছিলেন এই শাহজাহান। কাঠ ও গরু পাচারের পাশাপাশি মানব পাচারের অভিযোগও রয়েছে শাহজাহানের বিরুদ্ধে। এসবের মাধ্যমেই তাঁর প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের।

২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদল ঘটে। ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। বদলায় পরিস্থিতি। মাথার উপর থেকে হাত সরে যায় বাম বিধায়কের। বিপাকে পড়েন শাহজাহান। তার পর ২০১৬ সালে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন তিনি। বাম আমলে অবশ্য শাহজাহান কোনও পদ পাননি। কিন্তু সূত্রের খবর, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকই শাহজাহানকে নিয়ে এসেছিলেন জোড়াফুলে। তাঁর সাহায্যেই সাংগঠনিক পদ পান শাহজাহান।

২০১৯-এর লোকসভা ভোটে টলিউড সেলিব্রিটি নুসরত জাহানকে সন্দেশখালিতে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। সংখ্যালঘু ভোট একত্রিত করে নুসরতকে জেতানোর ক্ষেত্রে একটা বড় ভূমিকা ছিল তাঁর। যার পুরস্কার স্বরূপ পঞ্চায়েত ভোটে শেখ শাহজাহানকে প্রার্থী করে তৃণমূল। জিতে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ হন তিনি। ইডির দাবি, রেশন দুর্নীতি কাণ্ডেও যোগ রয়েছে শাহজাহানের।

 

 

ব্যুরো রিপোর্ট