কনস্টেবল দিদির কোলে দুধের শিশুকে দিয়ে নিশ্চিন্তে পরীক্ষা দিচ্ছেন এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।সোমবার এমনি মানবিক দৃশ্য ধরা পড়েছে পুরুলিয়া ঝালদায় (Jhalda)।যা দেখেই প্রশংসায় পঞ্চমুখ স্থানীয় এলাকার মানুষদের।
ঝালদা এলাকায় কম বয়সে এখনও বিয়ে দেওয়ার প্রচলন রয়েছে। তাই বহু পরীক্ষার্থীই বিবাহিত। তেমনই একজন ছিলেন পুরুলিয়ার ঝালদার বাসিন্দা মকরেস্বরী সিং মুড়ার।তাঁর শিশুসন্তানের বয়স এখন ৭ মাস।এবছর ঝালদারই খামার হাই স্কুলে থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিল মকরেস্বরী। সিট পড়েছিল ঝালদা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে।নিজের শিশুর জন্য চিন্তা নিয়েই পরীক্ষা দিচ্ছিল ওই পরীক্ষার্থী। বিষয়টি নজরে পড়ে ঝালদা থানার লেডি কনস্টেবল গীতা মাঝির।যিনি প্রথম দিন থেকেই পরীক্ষার্থীদের পাশে থেকেছেন। নিজে মহিলা হওয়ায় মেয়েদের প্রয়োজনের উপর ছিল তাঁর বিশেষ নজর।
আর এই বিষয়টি নজরে পড়তেই তৎক্ষণাৎ ওই পরীক্ষার্থীকে সাহায্য করতে তিনি এগিয়ে যান।৭ মাসের শিশুটিকে কোলে তুলে নেন গীতা।পুরো পরীক্ষার সময়টি একেবারে মায়ের স্নেহেই সেই শিশুটিকে আগলে রাখেন আড়াই বছরের সন্তানের জননী গীতা। কখনও কোলে নিয়ে কখনও বা পায়চারি করে টানা ৩ ঘণ্টা ওই দুধের শিশুকে সামলে রাখেন তিনি। এর মধ্যেই নিজের কাজও করে যান তিনি। তাঁর এই মমত্ববোধ দেখে আপ্লুত হয়ে যান পরীক্ষার্থী থেকে সাধারণ মানুষজনও।
ওই শিশুর মা মহিলা কনস্টেবলকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘প্রথমে খুব চিন্তা ছিল। কনস্টেবল দিদি এমন ভাবে আমার বাচ্চাকে রেখেছিলেন যে আমার আর কোনও ভাবনা হয়নি। নিশ্চিন্তে পরীক্ষা দিতে পেরেছি।’ এ বিষয়ে অবশ্য অনেকটাই নিস্পৃহ গীতা। তিনি শুধু বলেন, ‘মাকে পরীক্ষার সময় সে ভাবে না পেয়ে শিশুটি কাঁদছিল। যাতে শিশু ভালো থাকে আর মায়েরও পরীক্ষা দিতে সমস্যা না হয় তাই শিশুটিকে নিয়েছি। পুলিশের কাজই হলো মানুষের পাশে থাকা।’