এবার অভিষেকের সুরের কথা বললেন কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।মূলত শুক্রবার ইডি দফতর থেকে বেরিয়ে প্রায় ৪০মিনিট সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)।সেখানে অভিষেকের বিস্ফোরক অভিযোগ ছিল, “৮ মাসের মধ্যে পাচারকাণ্ডে ফেরার বিনয় মিশ্রের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন শুভেন্দু অধিকারী।বিনয়কে তোমার কেস দেখে নেব বলে আশ্বাস দিয়েছে শুভেন্দু। সঠিক সময়ে সেই ফোন রেকর্ড প্রকাশ্যে আনব।” একইসঙ্গে হুঁশিয়ারির সুরে অভিষেক বলেছিলেন, “আমি মিথ্যা বললে শুভেন্দু মানহানির মামলা করুন।আদালতে অডিও ক্লিপ জমা দেব।অডিও ক্লিপের ফরেন্সিক পরীক্ষা হোক।”
আচমকা অভিষেক এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করবেন সেটা বুঝে উঠতে পারেননি শুভেন্দু অধিকারী। ব্যাকফুটে চলে যান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। বিষয়টিকে এড়িয়ে যেতে এবং ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে তিনি নানারকম মন্তব্য করতে থাকেন। শুভেন্দু একবার বলছেন, তাঁর ফোন নম্বর সকলে জানে। একবার বলছেন, যিনি অভিযোগ করেছেন তাকেই প্রমাণ করতে হবে। কিন্তু একবারের জন্যও শুভেন্দু অধিকারী এটা অস্বীকার করতে পারেননি যে তাঁকে ও বিনয় মিশ্রকে নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বা মিথ্যা।
এখানেই শেষ নয়, শুভেন্দু অধিকারী এতটাই চাপে পড়ে গিয়েছেন যে, ভরা জনসভায় নিজের ফোন দেখিয়ে সবাইকে ফোন নম্বর বলছেন। যা নিয়ে শুভেন্দুকে তোপ দেগেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুনাল ঘোষ। এদিন কুণাল বলেন, “বিনয় মিশ্রের সঙ্গে কথোপকথন প্রসঙ্গে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে অভিযোগ করেছিলেন তা নিয়ে পাগলের প্রলাপ বকছে শুভেন্দু। এই শুভেন্দুই একবছর আগে বড় বড় কথা বলছিল। তার হাতে নাকি ফোন, কোন পুলিশ অফিসার কার সঙ্গে কথা বলছে সব রেকর্ড নাকি তার কাছে আছে, কেন্দ্রীয় সরকার নাকি তার হাতে, সেসব বড় বড় কথা এখন কোথায় গেল! আজ সেই শুভেন্দুকেই জনসভায় দাঁড়িয়ে নিজের ফোন নম্বর বলতে হচ্ছে। এটাই পরিবর্তন, এটাই মমতা ম্যাজিক। এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়।”
এরপরই সুর চড়িয়ে কুণাল বলেন, “অভিযোগ যদি মিথ্যা হয় তাহলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মামলা করুন শুভেন্দু। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিল বিনয় মিশ্রর সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে শুভেন্দুর। এই অভিযোগ তো অস্বীকার করতে পারছে না শুভেন্দু। বলতে তো পারছে না কথা বলেনি। শুভেন্দু বলছে, তার গলার স্বর নাকি অন্যভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। ইয়ার্কি মারার জায়গা পায়নি। যদি অভিষেকের অভিযোগ ভুল হয় তাহলে মামলা করুন। আমরাও চাই এই অডিও ক্লিপের ফরেন্সিক অডিট হোক। কার গলা? কীভাবে বলেছিলেন, কাকে বলেছিলেন, কীভাবে সেটিং-এর প্রস্তাব হয়েছিল, কার মাধ্যমে সেটিং করার কথা বলেছিলেন? কাকে পাঠাবেন বলেছিলেন? সব সামনে আসুক। হোক মামলা!”
সব মিলিয়ে অভিষেকের বিস্ফোরক অভিযোগের পর রাজ্য রাজনীতিতে আলোড়ন। প্রবল চাপে শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতাকে নিয়ে চরম অস্বস্তিতে বিজেপি।